২০২৫ সালে পাসপোর্ট করতে যা যা লাগবে
বাংলাদেশে পাসপোর্ট হল একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সরকারি নথি যা আন্তর্জাতিক ভ্রমণের জন্য আবশ্যক। ২০২৫ সালে নতুন বা পুনরায় ইস্যু করতে চাইলে কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম ও কাগজপত্র প্রয়োজন। এই আর্টিকেলে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো, কীভাবে পাসপোর্টের আবেদন করবেন, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, ফি, এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য।-
পাসপোর্টের ধরন ও বৈধতা:
- বর্তমানে বাংলাদেশে দুই ধরনের পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়: মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (MRP) এবং ই-পাসপোর্ট (E-Passport)।
- পাসপোর্টের বৈধতা ৫ বছর বা ১০ বছর হতে পারে।
-
নতুন পাসপোর্ট করতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:
- জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) বা জন্ম সনদ (১৮ বছরের কম বয়সীদের জন্য)।
- বর্তমান ঠিকানার প্রমাণ (যেমন বিদ্যুৎ বিল, ব্যাংক স্টেটমেন্ট বা ইউনিয়ন পরিষদের প্রত্যয়নপত্র)।
- অনলাইনে পূরণকৃত পাসপোর্ট আবেদন ফর্মের প্রিন্ট কপি।
- পাসপোর্ট সাইজের ছবি (ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন কেন্দ্রে ছবি তোলা হয়)।
- পূর্বের পাসপোর্ট (যদি থাকে)।
- পাসপোর্ট ফি জমার রশিদ।
-
পাসপোর্ট ফি ও প্রসেসিং সময়:
- সাধারণ প্রসেসিং (১৫-৩০ দিন): ৫ বছরের জন্য ৪,০২৫ টাকা, ১০ বছরের জন্য ৫,৭৫০ টাকা।
- জরুরি প্রসেসিং (৭-১০ দিন): ৫ বছরের জন্য ৬,৩২৫ টাকা, ১০ বছরের জন্য ৮,০৫০ টাকা।
- অতি জরুরি প্রসেসিং (২-৩ দিন): ৫ বছরের জন্য ৮,৬২৫ টাকা, ১০ বছরের জন্য ১২,০৫০ টাকা।
- মোবাইল ব্যাংকিং (বিকাশ, নগদ, রকেট) বা ব্যাংকের মাধ্যমে ফি পরিশোধ করা যায়।
-
পাসপোর্ট আবেদন প্রক্রিয়া:
- **অনলাইনে আবেদন ফরম পূরণ:** ই-পাসপোর্টের জন্য www.epassport.gov.bd থেকে আবেদন করতে হবে।
- **আবেদন ফি পরিশোধ:** মোবাইল ব্যাংকিং বা ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা জমা দিতে হয়।
- **বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদান:** নির্দিষ্ট পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও ছবি তুলতে হয়।
- **পুলিশ ভেরিফিকেশন:** আবেদনকারীর তথ্য পুলিশ যাচাই করবে (যদি প্রয়োজন হয়)।
- **পাসপোর্ট সংগ্রহ:** নির্দিষ্ট সময় পর এসএমএস নোটিফিকেশন পেয়ে পাসপোর্ট সংগ্রহ করা যাবে।
-
বিশেষ কিছু নির্দেশনা:
- আবেদন ফর্ম সঠিকভাবে পূরণ করুন – ছোট ভুলও সমস্যা তৈরি করতে পারে।
- সঠিক ঠিকানা প্রদান করুন – ভুল ঠিকানা হলে পুলিশ ভেরিফিকেশনে সমস্যা হতে পারে।
- জরুরি প্রয়োজনে দ্রুত প্রসেসিং সুবিধা বেছে নিন।
উপসংহার
বাংলাদেশে ২০২৫ সালে পাসপোর্ট করার নিয়ম তুলনামূলক সহজ এবং ডিজিটাল হয়েছে। সঠিক কাগজপত্র ও ফি পরিশোধ করে দ্রুত পাসপোর্ট পাওয়া সম্ভব। যদি প্রথমবার পাসপোর্ট করতে চান বা নবায়ন করতে চান, তবে উপরের নির্দেশনা অনুসরণ করলেই সহজেই করতে পারবেন।
পাসপোর্ট করতে কী কী কাগজপত্র লাগবে?
২০২৫ সালে পাসপোর্ট করতে আপনাকে নিম্নলিখিত কাগজপত্র জমা দিতে হবে:
✅ জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) বা জন্ম নিবন্ধন সনদ (১৮ বছরের নিচে হলে)
✅ পিতা-মাতার বা আইনগত অভিভাবকের NID (১৮ বছরের কম বয়সীদের জন্য)
✅ শিক্ষা সনদ বা চাকরির পরিচয়পত্র (প্রয়োজনে)
✅ ঠিকানার প্রমাণপত্র (বিদ্যুৎ/গ্যাস বিল বা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের সনদ)
✅ দুই কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি (বায়োমেট্রিকের জন্য অতিরিক্ত লাগবে না)
পাসপোর্টের জন্য অনলাইনে আবেদন করা যায় কি?
হ্যাঁ, আপনি অনলাইনে www.epassport.gov.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারেন। তবে ফরম পূরণের পর বায়োমেট্রিকের জন্য নির্দিষ্ট পাসপোর্ট অফিসে যেতে হবে।
পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে?
পাসপোর্টের ফি আবেদনকারীর প্রয়োজন ও সময়সীমার উপর নির্ভর করে:
✅ **নরমাল (১৫-৩০ দিন)** – ৪,০২৫ টাকা
✅ **অর্জেন্ট (৭-১০ দিন)** – ৬,৯০০ টাকা
✅ **সুপার অর্জেন্ট (২-৩ দিন)** – ১২,৬৫০ টাকা
পাসপোর্ট করতে কতদিন সময় লাগে?
নরমাল পাসপোর্ট করতে সাধারণত ১৫-৩০ দিন লাগে, অর্জেন্ট পাসপোর্ট ৭-১০ দিনের মধ্যে পাওয়া যায়, এবং সুপার অর্জেন্ট পাসপোর্ট ২-৩ দিনের মধ্যে পাওয়া যায়।
পাসপোর্ট করতে পুলিশ ভেরিফিকেশন কি বাধ্যতামূলক?
হ্যাঁ, সাধারণত পুলিশ ভেরিফিকেশন বাধ্যতামূলক, তবে বিশেষ ক্ষেত্রে (যেমন, পূর্বে ই-পাসপোর্ট থাকলে) পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগতে নাও পারে।
পাসপোর্ট আবেদন করার জন্য বয়সসীমা কত?
পাসপোর্টের জন্য ন্যূনতম বয়স নেই। তবে ১৮ বছরের কম বয়সীদের ক্ষেত্রে অভিভাবকের সম্মতি ও তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র প্রয়োজন।
কোন ঠিকানায় পাসপোর্ট আবেদন করতে হয়?
আপনার স্থায়ী বা বর্তমান ঠিকানার ওপর ভিত্তি করে নিকটস্থ পাসপোর্ট অফিসে আবেদন করতে হবে। সঠিক পাসপোর্ট অফিস জানতে www.epassport.gov.bd ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।
অনলাইনে পাসপোর্ট স্ট্যাটাস কিভাবে চেক করব?
আপনার পাসপোর্টের স্ট্যাটাস চেক করতে www.epassport.gov.bd/check-status লিংকে গিয়ে আপনার আবেদন নম্বর দিয়ে চেক করুন।